আমাদের ত্বক কেন সাদা বা কালো হয়?
আমরা যে সাদা হতে চাই এটা আসলে কত ঠিক
গায়ের যেই রং আছে সেটাই ভালো, সে কালো হোক বা সাদা। কখনো কালো ত্বককে সাদা করার চেষ্টা না করাই ভালো , যা আছে তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকুন। যেসব দেশে মানুষ ফর্সা হয়, তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদে বসে আমাদের মত রং পেতে চায়। আর আমরা তা প্রাকৃতিক ভাবে পেয়েও অবহেলা করি! মেলানীন ত্বককে বাঁচায়, যেকোনো ক্ষতিকর প্র্রভাব থেকে রক্ষা করে। আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমাদের চিন্তাধারা নিয়ে, আমাদের চিন্তা ধারা বদলাতে হবে ।প্রাকৃতিক ত্বক নিয়ে, আত্মবিশ্বাস নিয়ে বাঁচুন,সেটা নিয়ে বেশি কাটাছেঁড়া না করতেই আমি অনুরোধ করি।
আমার জানা মতে, পাকাপাকি ভাবে ফর্সা হতে গেলে skin whitening treatment করানো যায়, যেটা অনেক খরচের ব্যাপার, সাধারণ মানুষের পক্ষে করানোর অনেক বেশি কষ্টকর এবং তার অনেক খারাপ দিকও রয়েছে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে আমাদের শরীরে মেলানীন কমানোর মাদ্ধমে ত্বককে ফর্সা করা হয়। প্রসাধনী বা বাড়ির হলুদ, চন্দন, ইত্যাদি মেখে আপনার মুখের দাগছোপ কমাতে পারেন, সূর্যের তাপে রং কালো হলে তা আবার আগের মত হতে পারে বা তার থেকে কারাপও হতে পারে, মুখ হয়তো উজ্জ্বল হবে, কিন্তু প্রাকৃতিক ভাবে ফর্সা হতে পারেনা।
প্রাকৃতিক উপায়ে ফর্সা হওয়ার কোনও পদ্ধতি নেই, সে আপনি যাই প্রসাধনী মাখেন না কেন। গায়ের রং টা আমাদের জন্মগত ভাবে পাওয়া। যাদের শরীরে মেলানীন এর পরিমান বেশি হয়, তাদের রং সাদাবর্ণ হয় এবং মেলানীন আমাদের ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে রক্ষা করে।
মেয়েরা বিয়ের সময় সাজে কেন?
আমার মনে হয় এটা সবাই জানেন যে বিয়ের সময় মেয়েরা কেন সাজে। তবে যে বিষয়টি আমাদের বোঝা অতি জরুরি তা আমি বলছি আপনারা মনোযোগ সহকারে পড়ুন ।
এখন আর আগের মতো নেই। আমার মনে খটকা লেগেছে যে পরিবর্তন দেখে সেটা বলার জন্যই আমার এই আয়োজন। এখন দু-চার গ্রাম হেঁটে গেলেও কোনো কালো মেয়ে ( কিশোরী) দেখতে পাওয়া যাই না। সব মেয়ে সাদা রঙের। এমন কি কয়েক বছর আগেও যে কালো মেয়েটিকে তার ঘরের লোকেরা রেগে কালী' বলে ডাকতো সেই মেয়েটিও এখন ফুটফুটে সাদা।
এটা কী করে সম্ভব হলো কিছু কি লক্ষ্য করেছেন?
বাজারে বিভিন্ন ক্রীম-মলম জাতীয় সামগ্রী এসেছে, যেটি ব্যবহারে কালো ত্বক সাদা হয়ে যায়। ফার্মেসি ও কসমেটিকসের দোকানে ভিড় জমাচ্ছে কিশোরী তরুণীরা, যারা এখনো অবিবাহিত। গ্রামে বা শহরের মেয়ে বলে কথা না। আমাদের দেশের একটি মেয়েও বাকি নেই যে এ্যাসিড ঘষে ত্বকের স্বাভাবিক কোষ ধ্বংস করে দেয়নি।
এটা শুধু আমাদের দেশের মেয়েরাই করেনা সারা বিশ্বেই মেয়েরা সাজ সজ্জা সামগ্রী নিয়ে ব্যস্ত। বিশ্বের মুক্ত বাণিজ্য এখন প্রায় ৩০-৩৫% কসমেটিকসের দখলে । কসমেটিকএ বছরে প্রায় ২৫-৩০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য চলে । এর মধ্যে বেশিরভাগ ব্যবসা স্কিনকেয়ার সামগ্রী গুলোতে। মোট ব্যবসার ৪০% শুধু এশিয়ার বাজার। এশিয়া মহাদেশে মেয়েদের সাজগোজের জন্য প্রায় ১৩-১৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয় ।
আসুন জেনে নেই বর্ন বা চরর্মরোগ কেন হয়
এটি এক ধরণের ফাঙ্গাল ইনফেকশন। প্রধান যে ফাঙ্গাস এটি করে, তার নাম Malasezzia globosa ও Malasezzia furfur। এগুলি আমাদের ত্বকের মধ্যেই বাসবাস কর কিন্তু সবার ক্ষেত্রে রোগ সৃষ্টি করেনা। কাদের ক্ষেত্রে এটি রোগ সৃষ্টি করে তা বলা যায়না । তবে ব্রণ সাধারণতঃ বাচ্চাদের বেশিবা টিনএজার দের হতে দেখা যাই দেখা যায়। উঠতি বয়সে বা বয়সন্ধি কালে সাধারণতো বেশি এই সমস্যার সৃষ্টি হয়।
সাধারণত যেখানে তৈলগ্রন্থী ও চুল থাকে সেখানেই হতে পারে কারণ Malasezzia globosa ও Malasezzia furfur সেখানেই বাস করে। সেই কারণে হাত বা পায়ের তালুতে হয়না।
এটাতে ছেলে মেয়েদের তেমন কোনো ক্ষতি হয়না। তবে অনেক সময় চুলকানি হয় বা ফুসকুড়ি বড়ো হয়ে যাই তখন ব্যথার সৃষ্টি হয়
কিভাবে চিকিৎসা করবেন?
এটা যেহেতু ফাঙ্গাস তাই অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। এটা খুব বেশি বিপদজ্জন নই তাই ডাক্তার এর পরামর্শ অনুযায়ী হালকা ডোজ এ ওষুধ খেতে হবে। ডাক্তার যদি কোনো ক্রিম লাগাতে বলে তাহলে সেটা ২মাস বা তার অধিক সময় ব্যবহার করে যেতে হবে। ব্রণ ওষুধ দিয়ে সম্পূর্ণরূপে নিধন করা যায়না, কারণ এর ফাঙ্গাস গুলি ত্বকেই বাস করে, এবং প্রায় সবার দেহেই বাস করে । ওষুধ দিয়ে হয়তো একবার কমলতে পারে কিন্তু পরবর্তীতে আবার দেখা দিতে পারে। তবে একই ওষুধে আবার কমে যাবে, তাই চিন্তার কোনো কারণ নাই। আবার বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটা কমতে থাকে এবং একসময় একেবারেই থাকে না।
সুতরাং আমরা সাদা হবার বৃথা চেষ্টা না করা করে যেমন আছি সেটা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকা ভালো
No comments