***শিশুদের ঘুমের মধ্যে রোগ..........

 প্রায়শই না হলেও মাঝে মাঝেই মেয়েরা এসে শিশু চিকিৎসকদের কাছে সন্তানের ঘুমন্ত অবস্থায় নাক ডাকার সমস্যারা কথা বলে থাকেন । আবার অনেকে রয়েছে যারা ব্যাপারটাকে সেভাবে গুরত্ব দেয়না । কিন্তু ঘুমের মধ্যে এই নাক  ডাকার ব্যাপারটাকে মোটেই হালকা ভাবে নেয়া উচিৎ নয় । কারণ সবার না হলেও কিছু কিছু শিশুর কিন্তু নাক ডাকার জন্য ঘুমের ব্যাঘাত হয় । দেখা যায় সকল শিশুদের মধ্যে প্রায় ১০% শিশু ঘুমের মধ্যে নাক ডাকে । অনেকেরই আবার বয়স বাড়ার সাথে সাথে ঘুমন্ত অবস্থায় নাক ডাকা কমে যায় । তাদের নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু যেসব শিশুর নাক ডাকে তাদের মধ্যে ৪০% এর নাক ডাকলে ঘম ভেঙ্গে যায়  আবার অনেক সময় কারও কারও শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, এমনকি কিছু সংখ্যক শিশুর শ্বাসরোধ বা ক্ষনিক শ্বাসরোধও হতে পারে ।

চিকিৎসা পরিভাষায় এই রোগের নাম ‘অবষ্ট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া সিনড্রোম’। এই রোগের আসল কারণ জানা না গেলেও মূলত অ্যাডিনয়েড এবং টন্সিলের অসাভাবিক বৃদ্ধিকে দায়ি করা হয় । সাধারণত ২ থেকে ৬ বছরের শিশুর মধ্যেই এই রোগের প্রবনতা বেশি রয়েছে । ছেলে বা মেয়ে উভয়েই সমান ভাবে এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে । রোগাক্রান্ত বেশির ভাগ শিশুর ওজন কমে যায় বা ওজন কমা বাড়ার প্রবনতা দেখা যায় । বেশির ভাগ শিশুরেই মানসিক বিকাশ বিঘ্নিত হয় । আবার অনেকেরই টন্সিলের গ্ল্যান্ড বড় হয়ে যায় ।এই রোগাক্রান্ত শিশুদের কিন্তু বড়দের মতো দিনের বেলায় ঘুম ঘুম ভাব থাকেনা । রাতে অনেকের ঘুম ভাঙতে নাও পারে, ভাঙলেও ঘুমের গঠন অবিকৃত থাকে ।

যে সমস্ত শিশু ঘুমের মধ্যে   নাক ডাকে তাদের মায়েরা অভিযোগ করে যে তাদের সন্তান মুখ হাঁ করে শ্বাস নেয়, নাক বন্ধ হয়ে যায় সব সময়, এমনকি নাকের সুরে কথা বলে । নাকের ড্রপ দিতে দিতে তারা নাকাল হয়ে যান । রাতেও এসব শিশুর অনেক ঘাম ঝরে  । তাছাড়া জোরে জোরে শ্বাস নেওয়া, ঘুমের ভিতর ছটফট করা, অদ্ভত ভাবে ঘুমাতে দেখা ।আবার কেউ কেউ অনেক বেশি বয়স পর্যন্ত ঘুমের ঘোরে বিছানা ভিজিয়ে ফেলে । দেখা গেছে অ্যাডিনয়েড টনসিলের অপারেশনের পরে অনেক শিশু এই বিছানা ভিজিয়ে ফেলা থেকে মুক্তি পায় । 

সাধারনত রাতে ঘুমের সময় গ্রোথ হরমোন নিঃসরন হয়, কিন্ত রাতে নাক ডাকার জন্য গ্রোথ হরমোন ানঃসরন কমে যায় । যার ফলে শিশুটির গ্রোথ বা বৃদ্ধি ব্যাহত হয় । শব্দভান্ডার বয়স অনুযায়ি গড়ে উঠতে পারেনা । ফলে লেখা পড়া অনেক সময় ক্ষতিগ্রস্থ হয় ।

 এসব শিশুদের কিন্তু অ্যাডিনয়েড টনসিল অপারেশনের পরে লেখাপড়ায় উন্নতি করতে দেখা গেছে । বিভিন্ন উপসর্গ িএবং পলিসোমনোগ্রাফি পরীক্ষার দ্বারা এই রোগ নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব । যত তাড়াতাড়ি এই রোগ নির্ণয় করা যায় শিশুটির ততই মঙ্গল ।

No comments

Theme images by Raycat. Powered by Blogger.